বয়স ম𓄧াত্র ১৯ বছর। কলেজে পড়াশোনা করেন। সেইসঙ্গে, একটি সংস্থায় চাকরিও করেন। ফলত, সেখান থেকেই নিজের পড়াশোনা-সহ যাবতীয় খরচ চালিয়ে নিতে পারেন তিনি। ভেবেছিলেন, এভাবেই সর্বদা স্বাবলম্বী থাকবেন। কারও উপর কখনও নির্ভরশীল হবেন না কখনও। অভিযোগ, মেয়ের এই স্বাধীনচেতা মানসিকতাই মেনে নিতে পারেনি বাবা-মা। তাই মেয়েকে বাগে পেতেই তাঁকে বাড়িরই একটি ঘরে বন্ধ করে রেখে দেন তাঁরা। এমনকী, মেয়ে যাতে পালিয়ে যেতে না পারেন, তার জন্য তাঁর পায়ে বেঁধে রাখা হয় লোহার শিকল!
এই ঘটনা কোনও সিনেমার স্কꦑ্রিপ্ট বা অতীত ইতিহাস নয়। একবিংশ শতাব্দীতে এসে, শুধুমাত্র নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাওয়ার 'অপরাধে' সেই পায়েই 'বেড়ি' পরে বন্দি থাকতে হল ১৯ বছ🦩রের ওই তরুণীকে! শেষমেশ পুলিশের হস্তক্ষেপে বন্দিদশা থেকে মুক্তি পান তিনি। তাঁকে 'নিরাপদ আশ্রয়'-এ পাঠানোর বন্দোবস্ত করে পুলিশই।
ঘটনা প্রসঙ্গে জানা গিয়েছে, ১৯ বছরের আরতি সাউ হাওড়ার ঘুসুড়ি এলাকার বাসিন্দা। তিনি বড়বাজারের সাবিত্রী মহাবিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি নিউ ব্যারাকপুরের একটি 𝓀সংস্থায় কাজও করেন। সম্প্রতি সেই সংস্থায় সেলস 💎টিমের প্রশিক্ষণ শুরু হয়। কিন্তু, আরতির পক্ষে ঘুসুড়ি থেকে একইসঙ্গে বড় বাজারের কলেজ এবং অন্যদিকে নিউ ব্যারাকপুরের অফিস সামলানো কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
এই কারণেই তিনি অফিসের কাছাকাছি একটি জায়গায় সাময়িকভাবে থাকা-খাওয়ার বন্দোবস্ত করেন। প্রশিক্ষণ শেষ হওয়ার পর সেখান থেকে ফের ঘুসুড়ির বাড়িতে ফেরেন। তারপরই শুরু হয় অশান্তি। তাঁর বাবা-মা জানিয়ে দেন, চাকরি করা চলবে না। দ্রুতꦜ বি🍷য়ে করতে হবে। তাঁর জন্য পাত্র দেখা চলছে। কিন্তু, বেঁকে বসেন আরতি। জানান, ১৯ বছর বয়সে বিয়ে করার কোনও প্রশ্নই নেই। তাছাড়া, তিনি আরও পড়াশোনা করবেন। যাতে ভবিষ্যতে আরও বড় চাকরি করতে পারেন।
অভিযোগ, এরপরই আরতির পায়ে লোহার শিকল পরিয়ে তাঁকে ঘরে বন্ধ করে রেখে দেন তাঁর বাবা-মা। এমনকী, তাঁকে মারধরও করা হয়। কোনওভাবে এই খবর স্থানীয় থানায় পৌঁছয়। পুলিশ সাউ পরিবারের বাড়িতে হাজির হয়। একটি ঘর খুলে সেখান থেকে আরতিকে উদ্ধার করা হয়। তখনও তাঁর পায়ে পরানো ছিল লܫোহার শিকল! যা দেখে পুলিশও তাজ্জব বনে যায়।
এরপর আরতিকে তাঁর বাড়ি থেকে প্রথমে স্থানীয় থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নিজের সমস্ত কথা জানান আরতি। বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের মৌখিক অভিযোগ করেন। কিন্তু, তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে চাননি তিনি। শুধু পুলিশের কাছে একটিই অনুরোধ করেছেন - তাঁকে যেন কিছুতেই বাಞড়িতে - তাঁর বাবা-মায়ের কাছে পাঠানো না হয়।
অন্য়দিকে, আরতির বাবা গৌর সাউয়ের দাবি, তিনি জানেন যে প্রাপ্তবয়স্ক মেয়ের বা যেকোনও মানুষের পায়ে🦩ই এভাবে শিকল পরিয়ে রাখা বা কাউকে ঘরে বন্দি করে রাখা অপরাধ। তা সত্ত্বেও তিনি এমনটা করেছেন, শুধুমাত্র মেয়ের 'ভালো'র জন্য! মেয়ের ভালোর জন্যই তাঁরা চান, মেয়ে চাকরি, কলেজ সমস্ত ছেড়ে দিন এবং তাঁদের পছন্দ করা পাত্রকে বিয়ে করুন💮!
লিখিত অভিযোগ না করা হলে൲ও পুলিশ গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখছে এবং আরতিকেও একটি 'নিরাপদ আশ্রয়'-এ পাঠানোর ব্যবস্থা করেছে তারা।