বিগত দিনগুলিতে বারংবার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা ভারতে ঢুকে লুটপাট চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আবার অনেক জায়গাতেই বিএসএফ-কে ভারতীয় ভূখণ্ডেই কাঁটাতারের বেড়া দিতে বাধা দিয়েছে বিজিবি। আবার সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক বাংলাদেশি জঙ্গি ধরা পড়েছে দেশে। ফাঁস হয়েছে জাল পাসপোর্ট চক্র। এহেন পরিস্থিতিতে রাজৈতিক চাপানউতোর জারি আছে। বিএসএফের দিকে আঙুল তুলতে দেখা গিয়েছে তৃণমূলকে। তবে এবার মুর্শিদাবাদে গিয়ে বিএসএফকে শান্তিরক্ষায় দায়িত্ব নিতে বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি কারও প্ররোচনায় যাতে মুর্শিদাবাদের লোকেরা পা না দেন, তার জন্যে সতর্ক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। (আরও পড়ুন: ✱আরজি কর মামলার নির্দেশনামায় সমালোচনা পুলিশ ও সন্দীপের, একাধিক প্রশ্ন বিচারকের)
আরও পড়ুন: 🐓বিচারক মৃত্যুদণ্ড না দিয়ে ঠিক করেছেন,মত একদা আরজি কর মামলায় লড়া আইনজীবী বিকাশের
♛গতকল মুর্শিদাবাদে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'মুর্শিদাবাদের ও পারে বাংলার সীমান্ত রয়েছে। সেই সীমান্ত বিএসএফ দেখুক। আমাদের উপর অত্যাচার হলে আমরা দেখব। দয়া করে কারও প্ররোচনায় পা দিয়ে ও দিকে যাবেন না। কারণ অনেকের উদ্দেশ্য হল দাঙ্গা লাগিয়ে, দুই দেশের মধ্যে গন্ডগোল বাধিয়ে সরে পড়া। আমি চাই সীমান্তে বিএসফ দায়িত্ব নিক, যাতে সেখানে শান্তি প্রতিষ্ঠা হয়। আমি লোকাল পুলিশকে বলব, তাঁরা যেন মাইকিং করে ফিরে আসতে বলেন। কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না।'
ꦜএদিকে গত ১৮ জানুয়ারি মালদায় ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্তে বাংলাদেশিরা চড়াও হয়েছিল বলে অভিযোগ। সেই সময় বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের রুখে দিয়েছিল বিএসএফ। তবে মালদার সুকদেবপুরে এখনও পরিস্থিতি থমথমে। এই আবহে গ্রামবাসীদের সীমান্তের দিকে যাওয়ার ওপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী। গ্রামবাসীদের সংযত থাকার পরামর্শ দিয়েছে বিএসএফ। এদিকে সুকদেবপুরবাসীদের অভিযোগ, ইউনুস জমানাতেই বাংলাদেশিরা ভারতীয় ভূখণ্ডে এসে লুটপাট চালাতে শুরু করেছে। এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিএসএফের ১১৯ নং ব্যাটেলিয়নের জওয়ানরা টানা টহল দিয়ে চলেছেন সীমান্ত এলাকায়। এর আগে গত ১৮ জানুয়ারির ঘটনায় বাংলাদেশিদের অনুপ্রবেশ রুখতে সেখানে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটানো হয়। সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি জখম হন বলেও দাবি করা হয়েছিল। এদিকে সুকদেবপুরের পাশাপাশি মুর্শিদাবাদের ভগবনগোলাতেও নাকি সম্প্রতি বাংলাদেশিরা সীমান্ত পার করে এসে ভারতীয় ভূখণ্ড থেকে ফসল কেটে নিয়ে গিয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছিল।
♔বিগত বেশ কয়েকদিন ধরেই সীমান্তে কাঁটাতার দেওয়া নিয়ে সংঘাত দেখা গিয়েছে বিএসএফ এবং বিজিবির মধ্যে। এই আবহে একধিক জায়গায় ভারতীয় ভূখণ্ডের কাঁটাতার দিতে গিয়ে বাধার মুখে পড়ছে বিএসএফ। এর জেরে সীমান্তের বহু জায়গায় ছড়িয়েছে উত্তেজনা। এই ইস্যুতে বাংলাদেশের দাবি, ১৯৭৫ সালে যে আন্তর্জাতিক সীমান্ত চুকি দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছিল, তা অনুযায়ী, সীমান্তের জিরো পয়েন্ট থেকে ১৫০ গজ ভিতরে 'প্রতিরক্ষা কাঠামো' তৈরি করা যাবে। এদিকে ২০১০ সালে অবশ্য বাংলাদেশ ভারতকে লিখিত আকারে অনুমতি দিয়েছিল যে সীমান্তে ১৫০ গজের ভিতরেও প্রয়োজনে কাঁটাতারের বেড়া দিতে পারবে ভারত। এই কথা নিজে স্বীকার করেছেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গির আলম চৌধুরী।