♏ মহাকাশে নয়া মাইলফলক স্থাপনের জন্য প্রস্তুত ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো। ঠিক যেভাবে নদী বা সমুদ্র বন্দরে কোনও জাহাজ এসে নোঙর করে, এবার ঠিক সেভাবেই মহাকাশে 'নোঙর করবে' ভারতের দু'টি কৃত্রিম উপগ্রহ! সেই মাহেন্দ্রক্ষণের সাক্ষী থাকতে অপেক্ষা করতে হবে মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি, ২০২৫) পর্যন্ত। ওই দিনই মহাকাশে তাদের কক্ষপথে প্রতিস্থাপিত হয়ে যাবে উপগ্রহ দু'টি।
💯যে উচ্চাভিলাষী প্রকল্পের অধীনে ভারতের দুই উপগ্রহ - চেজার এবং টার্গেট মহাকাশে নোঙর করতে চলেছে, তার পোশাকি নাম - 'স্পেস ডকিং এক্সপেরিমেন্ট' (স্প্যাডেক্স)।
♏তথ্যাভিজ্ঞ মহল বলছে, বর্তমানে ভারতের মহাকাশ বিজ্ঞান চর্চা ও প্রযুক্তি যে কতটা এগিয়ে গিয়েছে, এই প্রকল্প রূপায়ণই তার প্রমাণ। ভারত এই অভিযানে সফল হলে পৃথিবীর সেই হাতে গোনা এলিট দেশগুলির তালিকায় নাম তুলে ফেলবে, যারা এখনও পর্যন্ত এই কাজ (অন-অরবিট ডকিং অপারেশন) করতে পেরেছে।
🐈স্প্য়াডেক্স স্যাটেলাইটগুলি গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল। সেগুলি ক্রমে তাদের গন্তব্যের পথে এগিয়ে চলেছে এবং তাদের মধ্যেকার দূরত্ব অত্যন্ত সতর্কভাবে কমিয়ে আনা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে তাদের মধ্যেকার এই দূরত্ব ছিল প্রায় ২০ কিলোমিটার। এখন তা ক্রমশ কমছে।
🌳ইউআর রাও স্যাটেলাইট সেন্টারের ডিরেক্টর এণ শঙ্করণ জানিয়েছেন, 'নোঙর করার জন্য' নির্দিষ্ট দূরত্বে পৌঁছে যাওয়ার পরই এই উপগ্রহগুলির 'অনবোর্ড প্রপালশন সিস্টেম' চালু করে দেওয়া হবে।
🐟বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুনে যতটা সহজ বলে মনে হয়, তার তুলনায় অনেক বেশি জটিল এই মহাকাশে নোঙর করার পদ্ধতি। সেই জটিল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এমন এক ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা হয়, যার সাহায্য সংশ্লিষ্ট উপগ্রহগুলি পরস্পরের ৫ কিলোমিটারের মধ্যে পৌঁছে গেলেই একটি ইন্টার-স্যাটেলাইট রেডিও ফ্রিকোয়েন্সির মাধ্যমে তারা পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনে সক্ষম হয়ে ওঠে।
🌳আর, এই যোগাযোগ স্থাপন হয়ে গেলেই দু'টি উপগ্রহ তাদের অবস্থান এবং গতিপথ সম্পর্কে একে অপরকে সমস্ত তথ্য আদান-প্রদান করতে সক্ষম হয়ে যায়। যা এই অভিযানের অন্তিম পর্যায়ের সাফল্য়ের জন্য অত্যন্ত জরুরি।
🌊এই নোঙর করার পদ্ধতির মধ্য়ে রয়েছে একটি বিশেষ প্রক্রিয়া। যাকে বলে, 'হাগিং' অ্য়াকশন। এর মাধ্যমে দু'টি উপগ্রহ নিজেদের মধ্য়ে স্থাপিত সংযোগ সুনিশ্চিত করে।
𓂃তথ্য বলছে, এই অভিযান শুধুমাত্র প্রযুক্তিগত সাফল্যের প্রমাণ নয়। এ হল ভারতীয় মহাকাশ বিজ্ঞান চর্চার এক দীর্ঘ গবেষণা ও অপেক্ষার ফসল। যার প্রথম পরিকল্পনা করা হয়েছিল ১৯৮৯ সালে। কিন্তু, এই প্রকল্প গতিলাভ করে ২০১৬ সাল থেকে। কারণ, ওই বছরই এই প্রকল্প এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় অনুমোদন পাওয়া গিয়েছিল।