অশন্তির আগুন যে কী ভয়াবহ হতে পারে, তা তাঁর ভালোই জানা। আজ থেকে প্রায় সাতবছর আগে এই অশান্তি আর হিংসাই কেড🀅়ে নিয়েছিল তাঁর কিশোর ছেলেকে। তারপর প♓ালটা আরও অশান্তির আশঙ্কা করেছিল মানুষ। কিন্তু, তেমন কিছুই ঘটেনি। কারণ, সেদিন পুত্রহারা সেই পিতাই হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন 'শান্তির দূত'!
প্রকাশ্যেই তিনি জানিয়ে দিয়েছিলেন, যদি তাঁর সন্তানের মৃত্যুর বদলা নেওয়ার নামে আবার কোনও অশান্তি হয়, তাহলে তিনি এলাকা ছেড়ে চলে যাবেন। আসানসোলের নুরানি মসজিদের সেই ইমাম - ইমদাদুল্লা রশিদির এই একটি কথাই পরিস্থিতি বদলে দিয়েছিল। এলাকায় শান্তি ফির🐻েছিল। আজ সেই ইমামই বলছেন, তাঁরাও সংশোধিত ওয়াকফ আইনের বিরোধী। তিনিও চান, এর প্রতিবাদ হোক, আন্দোলন হোক। কিন্তু, সেই আন্দোলন হতে হবে শান্তিপূর্ণভাবে। আন্দোলনের নামে হিংসা, অশান্তি, অন্যের ক্ষতি করলে তাতে প্রতিবাদের মূল উদ্দেশ্য কখনও পূরণ হয় না।
সময়টা ছিল ২০১৮ সালের মার্চ মাস। অশান্তি ছড়িয়ে পড়েছিল আসানসꦛোল শহরে। সেই অশান্তির বলি হতে হয়েছিল দশম শ্রেণির এক ছাত্রকে। তার নাম সিবতুল্লা। মৃত্যুর সময় তার বয়স ছিল মাত্র ১৬ বছর। ছেলের মৃত্যুশোক বুকে চেপেও সেদিন শান্তি ও সম্প্রীতির বার্তা দিয়েছিলেন ইমাম সাহেব।
এটা ২০২৫ সাল। মাঝে কেটে গিয়েছে সাত-সাতটা বছর। সংশোধিত ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদে অশান্ত হয়ে উঠে🦋ছে মুর্শিদাবাদের নানা প্রান্ত। সেকথা ইমাম ইমদাদুল্লা রশিদির কানেও পৌঁছেছে। এই ঘটনা তাঁকে মর্মাহত করেছে। সংবাদমাধ্যমে উঠে আসা তথ্য বলছে, সংশোধিত ওয়াকফ আইনের বিরোধিতা করলেও হিংসাত্মক আন্দোলনের পক্ষপাতী নন ইমাম সাহেব।
সংবাদমাধ্যমেཧ তিনি বার্তা দিয়েছেন, 'আর্জি জানাচ্ছি,ﷺ প্রতিবাদ হোক, তবে তা শান্তিপূর্ণভাবে। কারও কোনও ক্ষতি যেন না হয়। কাউকে কষ্ট দিয়ে কোনও আন্দোলন সফল হতে পারে না।'
বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রী꧙য় সরকারের দাবি, সংশোধিত ওয়াকফ আইন দরিদ্র মুসলিম ও মুসলিম নারীদের স্বার্থে কার্যকর করা হয়েছে। মানতে নারাজ মুসলিম সমাজ। তাদের সাফ কথা, এই আইন হাতিয়ার করে আ⛎সলে কোটি কোটি টাকার ওয়াকফ সম্পত্তি নানা অজুহাতে দখল করে তা বেচে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই আইনের প্রতিবাদেই অশান্তির আগুন ছড়িয়ে পড়েছে মুর্শিদাবাদে।
এই প্রসঙ্গে ইমাম সাহেবের বক্তব্য হল, 'মুর্শি🌄দাবাদে কী ঘটছে, কিছু কিছু শুনেছি। আমরা এই আইনের বিরুদ্ধে। এটা অধিকারে হস্তক্ষেপ। সংবিধান আমাদের প্রতিবাদ করার যে অধিকার দিয়েছে, তা আমরা করছি। এ দেশে সবার স্বাধীনভাবে বাঁচার এবং নিজের মত অনুযায়ী আচরণ করার অধিকার রয়েছে।... তবে তা করতে হবে কাউকে কোনও অসুবিধা🐠য় না ফেলে। তাই আমি আর্জি জানাচ্ছি, প্রতিবাদ হোক শান্তিপূর্ণ ভাবে। কোনও সম্পত্তির ক্ষতি যেন না করা হয়।'
প্রসঙ্গত, সংশোধিত ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে জাতীয় কংগ্রেস। একই ইস্যুতে মামলা রুজু করেছ♎েন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। ইমাম সাহেব আশাবাদী, আইনি পথেই এই নয়া আইনের বিরোধিতা সফল হবে এবং তার সুফলও মিলবে। তিনি চান, এভাবেই লড়াই হোক - আদালতে। সঙ্গে প্রতিবাদ চলুক গণতান্ত্রিক সমস্ত পদ্ধতি মেনে।