ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং নরেন্দ্র মোদীর ব্যক্তিগত রসায়ন এবং বন্ধুত্ব সর্বজনবিদিত। অনেক সময়ই মোদীর প্রশংসাও শোনা গিয়েছে ট্রাম্পের গলায়। এহেন ডোনাল্ড ট্রাম্প নাকি নরেন্দ্র মোদীতে নিজের অংশ খুঁজে পান। এমনই দাবি করলেন ট্রাম্প ১.০ জমানার মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা রবার্ট ও'ব্রায়েন। উল্লেখ্য, রবার্ট ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২১ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত মার্কিন এনএসএ পদে ছিলেন। এর আগে তিনি ট্রাম্প প্রশাসনে 'বন্দি বিনিময় বিষয়ক বিশেষ দূত' ছিলেন। বিগত দিনে ভারত-মার্কিন সম্পর্ককে মধুর করার নেপথ্যে রবার্টেরও ভূমিকা ছিল অনেকটা। ট্রাম্পের ভারত সফরের সময় তাঁর সঙ্গে এসেছিলেন রবার্ট। বর্তমানে তিনি 'আমেরিকান গ্লোবাল স্ট্র্যাটেজিস'-এর চেয়ারম্যান। ট্রাম্পের বিশ্ব দর্শন নিয়ে তিনিই হিন্দুস্তান টাইমসকে সাক্ষৎকার দিলেন। এহেন রবার্ট নিজের চোখে দেখা ট্রাম্পকে নিয়ে বললেন, 'প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে থেকে বিশ্ব নিয়ে স্পষ্ট ধারণা ছিল ট্রাম্পের। রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় গোটা বিশ্বে অনেক ঘুরেছিলেন তিনি। বিশ্বে বাণিজ্য কীভাবে চলে, তা নিয়ে তাঁর ধারণা ছিল।' (আরও পড়ুন: ꧃কেন ডিএ বাড়ছে না রাজ্য সরকারি কর্মীদের? অষ্টম বেতন কমিশন ঘোষণার পরই এল 'জবাব')
ꦍএদিকে রবার্ট আরও বলেন, 'ট্রাম্প ১০০ শতাংশ আমেরিকার প্রতি দায়বদ্ধ। তিনি মার্কিন নাগরিকদের দৃষ্টিকোণ থেকে সব কিছু দেখেন। কিছু ক্ষেত্রে সেটা আমাদের বন্ধুরাষ্ট্রগুলির জন্যেও ভালো হতে পারে এবং প্রতিপক্ষের জন্যে খারাপ হতে পারে। তবে তিনি সাধারণ মার্কিনিদেন নিয়ে চিন্তিত। উচ্চ শ্রেণির ওয়ালস্ট্রিট পাবলিক নিয়ে নয়। এই আবহে শুল্ক এবং বাণিজ্যিকরণ নিয়ে তাঁর ধারণা তৈরি হয়ে থাকে। তিনি দেখতে চান, মার্কিনিরা মোটা বেতনের চাকরি পাচ্ছেন। বিগত দিনগুলিতে সেই চাকরির বেশিরভাগে চিন সহ অন্যান্য দেশের লোকেরা পেয়ে আসছেন। এটা দেশের জন্যে খারাপ।' এরপর রবার্ট বলেন, 'অবশ্য ট্রাম্প যখন 'আমেরিকা ফার্স্ট' বলেন, তখন যে সবসময় শুধুমাত্র আমেরিকার কথা বলেন, তেমনটা কিন্তু নয়। তিনি প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে খুব শক্তিশালী বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়েছিলেন। তিনি মোদীকে খুব উঁচু চোখে দেখেন। তিনি ভাবেন, মোদী খুব স্মার্ট একজন রাজনীতিবিদ। আমার মনে হয়, তিনি মোদীতে নিজের কিছুটা অংশ দেখতে পেতেন। কারণ মোদী সবসময় আগে দেখেন, ভারত যাতে ভালো থাকে। ট্রাম্পের সেই বিষয়টা খুব ভালো লাগত। তাই তিনি মোদীকে সম্মান করেন।'
𓂃এদিকে চিন প্রসঙ্গে ট্রাম্প এবং মার্কিন দৃষ্টিভঙ্গি প্রসঙ্গে রবার্ট বলেন, 'আগামী ৫০ বছরে মার্কিন বিদেশ নীতি নির্ভর করবে চিনের অগ্রগতির ওপরেই। চিনের কমিউনিস্ট পার্টির উত্থান শুধুমাত্র আমেরিকার জন্যে নয়, বরং গোটা গণতান্ত্রিক সমাজ এবং আমাদের বন্ধুরাষ্ট্রগুলির জন্যে একটি হুমকির বিষয়। আমার মনে হয় এই কারণেই কোভিডের আগে আগে ট্রাম্প ভারতে গিয়েছিলেন। সেই সময় আমি বাদে অনেকেই তাঁকে পরামর্শ দিয়েছিলেন যাতে তিনি ভারতে না যান। আমাদের মতো গণতান্ত্রিক দেশগুলিকে চিনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তাই আমার মনে হয়, ট্রাম্পের দ্বিতীয় দফার প্রশাসনের বিদেশ নীতির ক্ষেত্রে এটা উল্লেখযোগ্য একটা ফ্যাক্টর হতে পারে। যেমন ধরুন কোয়াড। এটি এখনও পুরোপুরি একটি জোট হয়ে উঠতে পারেনি। এটা এখন একটা কূটনৈতিক গোষ্ঠী মাত্র। তবে এটি ভবিষ্যতের একটি খুব গুরুত্বপূর্ণ জোটের বীজ বলে আমি মনে করি। তাই ভূরাজনৈতিক দিক থেকে ইন্দো-প্যাসিফিক খুব গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে বলে আমার মত।'